সমুদ্রগুপ্তের samudragupta
সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি হরিষেণ রচিত 'এলাহাবাদ প্রশস্তি' থেকে তাঁর সামরিক প্রতিভা ও রাজত্বকালের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পাওয়া যায়।
'শক্তিমান মাত্রই যুদ্ধ করবে ও শত্রু নিপাত করবে' - চাণক্যের এই আদর্শ সমুদ্রগুপ্ত অনুসরণ করেছিলেন।
সমুদ্রগুপ্ত নিজেকে 'একরাট' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন।
তিনি দাক্ষিণাত্যের রাজন্যবর্গের কাছ থেকে কর গ্রহণ ও আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে তাঁদের নিজ নিজ রাজ্য ফিরিয়ে দেন। হরিষেণ সমুদ্রগুপ্তের এই নীতিকে 'গ্রহণ পরিমোক্ষ' বলে বর্ণনা করেছেন।
সিংহল-রাজ মেঘবর্ণ তাঁর অনুমতিক্রমে বোধগয়ায় একটি বৌদ্ধমঠ স্থাপন করেন।
দিগ্বিজয়ের শেষে সমুদ্রগুপ্ত অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন এবং সার্বভৌম শক্তির অধিকারী হিসেবে তিনি 'অশ্বমেধ-পরাক্রম', 'পরক্রমাঙ্ক', 'সর্বরাজোচ্ছেতা', 'অপ্রতিরথ' প্রভৃতি উপাধি ধারণ করেন।
ঐতিহাসিক স্মিথ তাঁকে 'ভারতীয় নেপোলিয়ন' বলে আখ্যায়িত করেছেন।
কেবলমাত্র যোদ্ধা বা সুশাসক হিসেবেই নয় -কবি, সংগীতজ্ঞ, শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত ও শিক্ষা-সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।
তাঁর 'কবিরাজ' বা শ্রেষ্ঠ কবি উপাধি থেকে কবিরূপে তাঁর অবিস্মরণীয় খ্যাতির পরিচয় পাওয়া যায়।
তাঁর মুদ্রায় অঙ্কিত নিজের বীণাবাদনরত মূর্তি থেকে তাঁর সংগীতানুরাগের কথা জানা যায়।
বিখ্যাত সংস্কৃত পণ্ডিত হরিষেণ তাঁর সভাকবি ছিলেন।
তিনি বৌদ্ধ পণ্ডিত বসুবন্ধুকে মন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেছিলেন।
গুপ্ত যুগে বৌদ্ধিক ও জাগতিক সমৃদ্ধির যে চরম বিকাশ পরিলক্ষিত হয়, তার সূচনা হয়েছিল সমুদ্রগুপ্তের রাজত্বকালেই। এই কারণে ঐতিহাসিক গোখলে তাঁকে 'প্রাচীন ভারতীয় সুবর্ণ যুগের অগ্রদূত' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।