Posts

ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ । Reasons for population growth in India

Image
  ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ। Reasons for population growth in India     জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনেক কারণ থাকে। জন্মহার, মৃত্যুহার, নারী-পুরুষের অনুপাত, নারীর গর্ভধারণ ক্ষমতার হার, বয়স, পারিবারিক কাঠামো, বিয়ের বয়স ইত্যাদির ওপর কোনো জায়গায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি নির্ভর করে। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, 1901 থেকে 1911 পর্যন্ত বেশ ধীর গতিতেই জনসংখ্যার বৃদ্ধি হয়েছে। তবে 1921 খ্রিস্টাব্দ ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দশক। এই দশকে ভারতের জন্মহার ছিল হাজারে 48 এবং মৃত্যুহার ছিল হাজারে 47। আসলে এই দেশে প্লেগরোগে অনেক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তা ছাড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলে সারা দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ হয়। কিন্তু 1921 থেকে 1951 এই ত্রিশ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায় ভারতে জনসংখ্যার হার বেড়ে চলেছে। এই বাড়ার মূল কারণ হল মৃত্যুহার কমে যাওয়া অথচ জন্মহার তেমনভাবে কমেনি। 1921-এর পর থেকে ভারতে মৃত্যুহারের মান ক্রমশ কমছে। ইতিহাসে তাই 1921-কে ভারতের ক্ষেত্রে Great divide বা Turning point হিসেবে ধরা হয়।  বিজ্ঞানের উন্নতি, প্রতিষেধক ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থা ইত্যাদির ফলে মৃত্...

বিকাশের বৈশিষ্ট্য । Characteristic of development

Image
  বিকাশের  বৈশিষ্ট্য । Characteristic of development       বিকাশ হল একটি প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তির ক্ষমতার সূচনা বা বৃদ্ধি করে এবং ব্যক্তিকে উৎকর্ষতার সঙ্গে কার্যসম্পাদনে সাহায্য করে। যেমন-সঞ্চালন ক্ষমতা বিকাশের ফলে শিশু 'হাঁটি হাঁটি পা-পা' থেকে স্বচ্ছন্দে দৌড়োতে পারে।  ১.বিকাশ পরিবর্তন ঘটায়: ব্যক্তির মধ্যে গুণগত ও পরিমাণগত পার্থক্যের অন্যতম কারণ হল বিকাশ, তবে এই পরিবর্তন একমুখী এবং ক্রমোন্নত প্রকৃতির। ২. শিখনের ফলে বিকাশ: Bayer-এর মতে, আচরণের পরিবর্তন বা শিখনের ফলে বিকাশ ঘটে। এই আচরণের পরিবর্তনের জন্য পরিকল্পনা প্রয়োজন। এখানে পরিকল্পনা বলতে বোঝায় ব্যক্তিজীবনে শিখনের বিন্যাস। পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার ফলে শিশু যে শিখন অভিজ্ঞতাগুলি অর্জন করে তারই সমন্বয় হল বিকাশ। ৩. বিকাশ হল সংশ্লেষণ: কোনো কোনো মনোবিজ্ঞানী বিকাশকে পরিণমন বা শিখনের ফল হিসেবে বিবেচনা করতে অস্বীকার করেছেন। তাঁদের মতে, এই দুটি ব্যাখ্যায় বিকাশকে নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে পিয়াজে বলেন, কোনো কোনো মনোবিদ বিকাশকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নির্দিষ্ট শিখন অভিজ্ঞতাগুলির সমন্বয় বলে মনে কর...

শিশুর জীবন বিকাশে মাতৃভাষার গুরুত্ব ।। The importance of mother language

Image
  শিশুর জীবন বিকাশে মাতৃভাষার গুরুত্ব ।।  The importance of mother language       মাতৃভাষা মায়ের ভাষা। এই ভাষাতেই শিশু তার জীবনের প্রথম ভালোবাসা মাখানো কথা বলতে শেখে। এই ভাষাতে মায়ের বুকভরা ভালোবাসা, স্নেহ, আদর আছে। এই ভাষার মাধ্যমেই তার মানবিক সত্তাগুলি বিকাশ লাভ করে। মাতৃভাষার উপযোগিতা তাই অনস্বীকার্য।  ক.সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে মাতৃভাষার প্রয়োজনীয়তা: মানুষ সামাজিক জীব, সমাজে বসবাস করতে গিয়ে তাকে ভাবের আদানপ্রদান করতে হয়। এইভাবে অপরের সঙ্গে মেলামেশা, বাক্যালাপ ও কথোপকথনে সামাজিক মানুষ ভাষা ব্যবহারে দক্ষ হয়ে ওঠে। সমাজসচেতন ব্যক্তি তার মনের ভাবকে যথাযথভাবে প্রকাশ করতে পারে। মাতৃভাষার মাধ্যমে শিশুর সামাজিক সত্তাগুলি আস্তে আস্তে বিকশিত হয়ে ওঠে। মাতৃভাষা জাতীয় ঐতিহ্যের ধারক এবং বাহক। শিশু যখন আস্তে আস্তে বড়ো হয়ে ওঠে মাতৃভাষার মাধ্যমে সে প্রগতিশীল চিন্তাধারার অধিকারী হয়। মাতৃভাষার মাধ্যমেই সামাজিক সত্তা বিকাশের দ্বারা শিশু বৃহত্তর জীবনে সামাজিক জীব হিসেবে পরিগণিত হয়। তাই এইক্ষেত্রে মাতৃভাষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। খ. মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে মাতৃভাষার প্রয়োজনীয়ত...

শিশুর বিকাশ ও তার নীতি সম্পর্কে আলোচনা । definition of child development

Image
           শিশুর বিকাশ ও তার নীতি সম্পর্কে আলোচনা । definition of child development     বিকাশ একটি প্রক্রিয়া যা একাধিক নীতির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত,  বিকাশের নীতিগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল- ক. প্রাথমিক বিকাশ পরবর্তী বিকাশ অপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। এর কারণ হল শিখন এবং অভিজ্ঞতা প্রাথমিক বিকাশের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। এই শিখন ও অভিজ্ঞতার প্রভাবে শিশুর ব্যক্তিগত ও সামাজিক সংগতিবিধানে যদি কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তা অভ্যাসে পরিণত হওয়ার পূর্বে পরিবর্তন করা সম্ভব। খ. বিকাশ কীভাবে কার্যকরী হবে, সে সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ত্বরান্বিত বা বিলম্ব ঘটতে পারে। গ. বিকাশের ক্ষেত্রে সব শিশুদের মধ্যে সাদৃশ্য দেখা যায়। যেমন-সব শিশুই হাঁটার পূর্বে দাঁড়াতে শেখে এবং চতুর্ভুজ অঙ্কনের পূর্বে বৃত্ত অঙ্কন করতে সক্ষম হয়। বিকাশ সাধারণ থেকে বিশেষ প্রতিক্রিয়ার দিকে অগ্রসর হয়। বিকাশ নিরবচ্ছিন্ন। বিভিন্ন দিকের বিকাশের হার বিভিন্ন এবং বিভিন্ন দিকেও বিকাশের মধ্যে সম্পর্ক বর্তমান। ঘ. অংশত বংশধারা এবং অংশত পরিবেশের প্রভাবের ফলে বিকাশের ক্ষেত্রে পা...

বৃদ্ধি কাকে বলে ও বৈশিষ্ট্য । Definition of Growth

Image
          বৃদ্ধি বলতে বোঝায় ধারাবাহিকভাবে অগ্রগতিমূলক পরিবর্তন। অগ্রগতিমূলক কথার অর্থ হল এটি সামনের দিকে এগিয়ে চলে, পশ্চাতের দিকে নয়। ধারাবাহিকতার অর্থ হল পরিবর্তন আগে ও পরে নির্দিষ্ট পরিমাণে হয়। বৃদ্ধি বলতে মনোবিজ্ঞানীরা শিশুর দেহের পরিমাণগত (Quantitative) পরিবর্তন অর্থাৎ দেহের আয়তন (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা) ও ওজনের বৃদ্ধিকে সূচিত করেছেন। এই প্রসঙ্গে মনোবিজ্ঞানী Arnold Gessel বলেছেন-"Growth is a function of the organism rather than of the environment as such." অর্থাৎ বৃদ্ধি হল দেহযন্ত্রের ক্রিয়া যা পরিবেশের ক্রিয়ার দ্বারা সম্পূর্ণভাবে নির্ধারিত হয় না। বৃদ্ধির সাধারণ বৈশিষ্ট্যসমূহ জন্মের পর শিশুর বৃদ্ধি কীভাবে ঘটে সে সম্পর্কে বিভিন্ন গবেষণা থেকে মনোবিজ্ঞানীরা বৃদ্ধির যে বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ণয় করেছেন সেগুলি হল-বংশগতি ও পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার ফলে শিশুর বৃদ্ধি ঘটে। জন্মের পর থেকে শিশুর দৈহিক বৃদ্ধির হার বিভিন্ন বয়সে কখনও বাড়ে, আবার কখনও কমে।জন্ম থেকে আড়াই বছর বয়স পর্যন্ত দৈহিক বৃদ্ধির হার খুব দ্রুত হয়। • আড়াই বছর বয়স থেকে বারো কিংবা তেরো বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর দৈহিক ব...

ভারতবর্ষে বার্ধক্যের সমস্যা || The problem of aging in India

Image
 ভারতবর্ষে বার্ধক্যের সমস্যা || The problem of aging in India             মানুষের জীবনচক্রে শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও প্রৌঢ়ত্ব পেরিয়ে একসময় আসে বার্ধক্য। জীবনচক্রের পরিণতিতে বার্ধক্যের আগমন অবশ্যম্ভাবী। এইসময় মানবশরীরের সামর্থ্য হ্রাস পায়; সেইসঙ্গে লোপ পায় আর্থিক সংগতিও। ধারণা: বার্ধক্যের সূচক হিসেবে একটি বিশেষ বয়ঃসীমার কথা বলা হয়। সাধারণভাবে বলা যায়, চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সই হলো বার্ধক্যের নির্দেশক। এই বয়সসীমা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেমন-আমেরিকায় ৬৫ বছর, কোরিয়াতে ৪৫ বছর প্রভৃতি। তবে ভারতবর্ষে ৬০ বছর বয়সকেই বার্ধক্যের সূচক বলে মেনে নেওয়া হয়েছে। অধ্যাপক বিশ্বনাথ ঘোষ এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন- "Being old is the last stage-the last frontier of our lives." সমস্যাসমূহ: সম্যকভাবে অবহিত হওয়ার জন্য বার্ধক্যের সমস্যাগুলিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- 1. জৈবিক ও শারীরিক সমস্যা 2. সামাজিক সমস্যা 3. অর্থনৈতিক সমস্যা 4. মানসিক সমস্যা 1. জৈবিক ও শারীরিক সমস্যা: বৃদ্ধদের সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হলো জৈবিক ও শারীরিক সমস্যা। এইসময় মানুষের স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটে। স...

গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ ও শহরাঞ্চলের পরিবেশের সমস্যা ।। Environment problem in rural and urban areas

Image
  গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ ও শহরাঞ্চলের পরিবেশের সমস্যা ।। Environment problem in rural and urban areas ○গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ সমস্যা: ভারতের শতকরা 78 ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। গ্রামাঞ্চলের পরিবেশে অন্যতম কতকগুলি সমস্যা হল- • গ্রামাঞ্চল মূলত কৃষিভিত্তিক। কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের যথেচ্ছ ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার জমির উর্বরতাকে নষ্ট করে দিচ্ছে। জমিতে অবস্থিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গ, জীবাণু, পাখি, ব্যাং ইত্যাদির সংখ্যা কমে গিয়ে কৃষিজমির বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বহুলাংশে বিনষ্ট করে দিয়েছে। • কৃষিকাজের জন্য অধিক পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল তোলার কারণে পানীয় জলের নলকূপ, জলাধার প্রভৃতি শুকিয়ে যায়, গ্রীষ্মে জলাভাব দেখা দেয়। আর্সেনিক দূষণযুক্ত ক্ষতিকর জল নলকূপ দিয়ে উঠতে থাকে। • গ্রামাঞ্চলে জ্বালানির প্রয়োজনে গাছপালা কাটার ফলে সবুজ আচ্ছাদন কমছে। সেই সলো ক্রমবর্ধমান গবাদি পশু তৃণভূমিতে নিবিড়ভাবে চারণ করার ফলে ভূমিক্ষয় ঘটছে। • উন্নতা ও আর্দ্রতার পরিবর্তন ঘটছে, যার ক্ষতিকর প্রভাব সজীব জগতের ওপর বাড়ছে। • ভূমিক্ষয় হওয়ার ফলে কৃষিজমির উৎপাদন ক্ষমতা কমছে। • নানা রাসায়নিক সার, কীটনাশক বা আগাছানাশক পদার্থে...